विवेचन सारांश
চতুর্ভূজ রূপের দর্শন এবং তার প্রাপ্তির সাধন
পরম্পরাগত প্রার্থনা, সুন্দর মনোহর বিগ্রহের সামনে জ্ঞান ও প্রজ্ঞার প্রতীক দীপ প্রজ্জ্বলন এবং যোগেশ্বর ভগবান শ্রী কৃষ্ণ, আদি গুরু শঙ্করাচার্য এবং গুরুদেব আচার্য শ্রী গোবিন্দ দেব গিরি জীকে প্রণাম করে একাদশ অধ্যায়ের চতুর্থ ও সমাপনী বিবেচন সত্র আরম্ভ হয়। এই অধ্যায়ের প্রণয়নে (রচনা) অর্জুনের অনেক মনঃস্থিতি প্রতিফলিত হয়েছে। অর্জুন শঙ্কিত ও বিচলিত হলেন, অর্জুন শিহরিত হয়ে উঠলেন, অর্জুন স্তম্ভিত হলেন, অর্জুন চমৎকৃত হলেন, অর্জুন গ্লানিবোধ করলেন যে তিনি যোগেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করেছেন। অর্জুন অত্যন্ত সৌভাগ্যবান যে তিনি ভগবানের বিশ্বরূপ দর্শন করেছিলেন এবং চতুর্ভুজ রূপেরও দর্শন করতে পেরেছিলেন।
অর্জুন উবাচ
দৃষ্ট্বেদং মানুষং রূপং তব সৌম্যং জনার্দন ।
ইদানীমস্মি সংবৃত্তঃ সচেতাঃ প্রকৃতিং গতঃ॥৫১॥
অর্জুন শ্রী ভগবানকে বলেন, হে জনার্দন, আপনার এই বিরাট রূপ দেখার পর আপনার সৌম্য মনুষ্যরূপ দর্শন করে আমার চিত্ত স্থির হয়েছে এবং আমি পুনরায় নিজের মনের স্বাভাবিক অবস্থা প্রাপ্ত করে নিয়েছি।
এই অধ্যায়ের অন্তিম চারটি শ্লোকে ভগবানের সান্নিধ্যে থাকা ও ভগবানের পরমধামে প্রবেশ করার বিধির বর্ণন করা হয়েছে। যোগের পথে অগ্রসর হলে ধীরে ধীরে বিভক্ততা চলে যায় এবং এই বিভক্ততার সমাপ্তি হলে ভক্তির প্রাবল্য দেখা যায়। মানুষ বিভক্ত থেকে ভক্ত হয়ে যায়।
অর্জুন উবাচ
দৃষ্ট্বেদং মানুষং রূপং তব সৌম্যং জনার্দন ।
ইদানীমস্মি সংবৃত্তঃ সচেতাঃ প্রকৃতিং গতঃ॥৫১॥
অর্জুন শ্রী ভগবানকে বলেন, হে জনার্দন, আপনার এই বিরাট রূপ দেখার পর আপনার সৌম্য মনুষ্যরূপ দর্শন করে আমার চিত্ত স্থির হয়েছে এবং আমি পুনরায় নিজের মনের স্বাভাবিক অবস্থা প্রাপ্ত করে নিয়েছি।
এই অধ্যায়ের অন্তিম চারটি শ্লোকে ভগবানের সান্নিধ্যে থাকা ও ভগবানের পরমধামে প্রবেশ করার বিধির বর্ণন করা হয়েছে। যোগের পথে অগ্রসর হলে ধীরে ধীরে বিভক্ততা চলে যায় এবং এই বিভক্ততার সমাপ্তি হলে ভক্তির প্রাবল্য দেখা যায়। মানুষ বিভক্ত থেকে ভক্ত হয়ে যায়।
11.52
শ্রীভগবানুবাচ
সুদুর্দর্শমিদং(ম্) রূপং(ন্),দৃষ্টবানসি য়ন্মম
দেবা অপ্য়স্য় রূপস্য,নিত্য়ং(ন্) দর্শনকাঙ্ক্ষিণঃ॥52॥
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বললেন—তুমি আমার যে চতুর্ভুজ রূপ দর্শন করেছ তার দর্শন পাওয়া বড়ই দুর্লভ। দেবতাগণও সর্বদা এই রূপের দর্শনাকাঙ্ক্ষী।
শ্রীভগবান অর্জুনকে সম্বোধিত করে বললেন যে তাঁর এই চতুর্ভূজ রূপের দর্শন অত্যন্ত দুর্লভ। দেবতা-মনুষ্য, সকলেই এই রূপের দর্শন হেতু ব্যাকুল থাকেন। এই রূপ দর্শনের জন্য প্রচেষ্ঠা এবং পথ, দুইই অপেক্ষাকৃত দীর্ঘ্য কিন্তু তাঁর দর্শন দুর্লভ নয়।
নাহং(ম্) বেদৈর্ন তপসা,ন দানেন ন চেজ্যয়া
শক্য এবংবিধো দ্রষ্টুং(ন্),দৃষ্টবানসি মাং(ম্) য়থা॥53॥
আমার যে বিশ্বরূপের দর্শন তুমি করেছ তা বেদাধ্যয়ন, তপস্যা, দান বা যজ্ঞের দ্বারাও সম্ভব নয়।
শ্রীভগবান বলেন, হে অর্জুন, আমার যে চতুর্ভুজ রূপ তুমি দেখেছো, সেই রূপের দর্শন বেদ পাঠের দ্বারা, তপস্যা দ্বারা, দান বা যজ্ঞ দ্বারা সম্ভব নয়। আবার সম্পূর্ণরূপে এই বক্তব্য সত্যও নয়। এটি একটি উদাহরণ দিয়ে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে, যেমন ধরুন একজন ব্যক্তিকে পুনে থেকে মুম্বাই যেতে হবে, সে তার ইচ্ছানুযায়ী ট্রেন বা গাড়ি চড়ে যেতে পারে। তার মুম্বাই যাওয়ার পথে লোনাওয়ালাও (মুম্বাইয়ের নিকটস্থ একটি শহর) আসবে। তবে তার গন্তব্যস্থান হলো মুম্বাই। ট্রেন, বাহন, পথ চলাকালীন মধ্যবর্তী স্থানগুলো, এই সব হলো সাধন (উপায়), কিন্তু গন্তব্য নয়, অন্তিম গন্তব্য হলো মুম্বাই। ঠিক একইভাবে বেদ অধ্যয়ন, তপস্যা, দান ও যজ্ঞ হচ্ছে সাধন, এসবই করতে হবে কিন্তু একটা সময় আসবে যখন এই উপায়গুলোকে ত্যাগ করে গন্তব্যের দিকে অগ্রসর হতে হবে।
আদিগুরু শঙ্করাচার্য বলেছেন :
হে মোহে আসক্ত বন্ধু, গোবিন্দের উপাসনা কর, গোবিন্দের নাম নাও, গোবিন্দকে ভালবাসো, কারণ মৃত্যুর সময় ব্যাকরণের নিয়ম স্মরণ করে নিজেকে রক্ষা করতে পারবে না।
ব্যাকরণ, বেদ, দান, তপস্যা ও যজ্ঞ আবশ্যক কিন্তু সমস্ত একাগ্রতা সর্বদা অন্তিম লক্ষ্যেই নিবিষ্ট থাকা আবশ্যক। বুঝে নেওয়া, বিশ্বাস করা এবং জেনে যাওয়ার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। এটা জেনে যাওয়ার অর্থ হলো নিজের অস্তিত্ব মুছে ফেলা। বিন্দুকে সিন্ধুতে উৎসর্গ করে দেওয়া। গঙ্গার জলের প্রতিটি বিন্দু, নিজেকে সিন্ধুর মধ্যে সমাহিত করে দেয়। সে সিন্ধুর সাথে এক হয়ে যায়, সিন্ধুতে তার নিজের অস্তিত্ব বিসর্জন করে দেয়।
এই কিছুদিনের মধ্যেই গণপতি (গণেশ) উৎসব আরম্ভ হয়ে যাবে। আমরা দশ দিন ধরে গণপতির মূর্তির পুজো করব এবং দশমীর দিন সেই মূর্তিটি জলে বিসর্জন করব। আমাদের কোন প্রকার দুঃখ হবে না। উৎসবে মুখের হয়ে, গান-বাজনার মধ্যে দিয়ে আমরা সেই মূর্তিটিকে জলাশয়ে বিসর্জন করবো এবং তা জলের সাথে মিশে বিলীন হয়ে যাবে। সেই জল গণেশময় হয়ে যাবে।
আমরা নদীর পূজা করি, গঙ্গার পূজা করি, আমরা যমুনাকে শাড়ি পরিয়ে পূজা করি, আমরা পর্বতের পূজা করি, গোবর্ধনের পূজা করি, বৃক্ষের পূজা করি, আমরা বট সাবিত্রীতে বটবৃক্ষের পূজা করি, বিজয়া দশমীর দিন শমী গাছের পূজা করি, গোবৎস দ্বাদশীর দিন (বাসু বারাস) গরু ও বাছুরের পূজা করি, এমনকি নাগ পঞ্চমীর দিনে আমরা নাগ দেবতার পূজাও করি।
এই সমস্ত সাধনের মাধ্যমে আমাদের লক্ষ্য হল নিজের গন্তব্যে উপনীত হওয়া।
আদিগুরু শঙ্করাচার্য বলেছেন :
ভজ গোবিন্দম ভজ গোবিন্দম,
গোবিন্দম ভজ মুঢ়মতে।
সম্প্রাপ্তে সন্নিহিতে কালে,
ন হি ন হি রক্ষতি ডুকৃঞ্ করণে ।1।
গোবিন্দম ভজ মুঢ়মতে।
সম্প্রাপ্তে সন্নিহিতে কালে,
ন হি ন হি রক্ষতি ডুকৃঞ্ করণে ।1।
হে মোহে আসক্ত বন্ধু, গোবিন্দের উপাসনা কর, গোবিন্দের নাম নাও, গোবিন্দকে ভালবাসো, কারণ মৃত্যুর সময় ব্যাকরণের নিয়ম স্মরণ করে নিজেকে রক্ষা করতে পারবে না।
ব্যাকরণ, বেদ, দান, তপস্যা ও যজ্ঞ আবশ্যক কিন্তু সমস্ত একাগ্রতা সর্বদা অন্তিম লক্ষ্যেই নিবিষ্ট থাকা আবশ্যক। বুঝে নেওয়া, বিশ্বাস করা এবং জেনে যাওয়ার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। এটা জেনে যাওয়ার অর্থ হলো নিজের অস্তিত্ব মুছে ফেলা। বিন্দুকে সিন্ধুতে উৎসর্গ করে দেওয়া। গঙ্গার জলের প্রতিটি বিন্দু, নিজেকে সিন্ধুর মধ্যে সমাহিত করে দেয়। সে সিন্ধুর সাথে এক হয়ে যায়, সিন্ধুতে তার নিজের অস্তিত্ব বিসর্জন করে দেয়।
এই কিছুদিনের মধ্যেই গণপতি (গণেশ) উৎসব আরম্ভ হয়ে যাবে। আমরা দশ দিন ধরে গণপতির মূর্তির পুজো করব এবং দশমীর দিন সেই মূর্তিটি জলে বিসর্জন করব। আমাদের কোন প্রকার দুঃখ হবে না। উৎসবে মুখের হয়ে, গান-বাজনার মধ্যে দিয়ে আমরা সেই মূর্তিটিকে জলাশয়ে বিসর্জন করবো এবং তা জলের সাথে মিশে বিলীন হয়ে যাবে। সেই জল গণেশময় হয়ে যাবে।
আমরা নদীর পূজা করি, গঙ্গার পূজা করি, আমরা যমুনাকে শাড়ি পরিয়ে পূজা করি, আমরা পর্বতের পূজা করি, গোবর্ধনের পূজা করি, বৃক্ষের পূজা করি, আমরা বট সাবিত্রীতে বটবৃক্ষের পূজা করি, বিজয়া দশমীর দিন শমী গাছের পূজা করি, গোবৎস দ্বাদশীর দিন (বাসু বারাস) গরু ও বাছুরের পূজা করি, এমনকি নাগ পঞ্চমীর দিনে আমরা নাগ দেবতার পূজাও করি।
এই সমস্ত সাধনের মাধ্যমে আমাদের লক্ষ্য হল নিজের গন্তব্যে উপনীত হওয়া।
ভক্ত্যা ত্বনন্যয়া শক্য, অহমেবংবিধোऽর্জুন
জ্ঞাতুং(ন্) দ্রষ্টুং(ঞ্) চ তত্ত্বেন,প্রবেষ্টুং(ঞ্) চ পরন্তপ॥54॥
হে পরন্তপ অর্জুন ! একনিষ্ঠ ভক্তি দ্বারাই এই প্রকার আমাকে জানতে ও স্বরূপতঃ প্রত্যক্ষ করতে এবং আমাতে প্রবিষ্ট হতে অর্থাৎ একাত্বরূপে লাভ করতে ভক্তগণ সমর্থ হয়, অন্য উপায়ে নয়।
একটি শিশু যখন জন্ম নেয় তখন তার মধ্যে অহং বা অহংকার থাকে না, সেই স্থান শূন্য অবস্থায় থাকে। তারপর যেমন যেমন শিশুটি বড় হয়, সর্বপ্রথম মা তার মধ্যে মূল্যবোধের বীজ বপন করেন। মা যখন রান্নাঘরে রান্না করছে, তখন সন্তান মায়ের কোলে যেতে চায়। অনিচ্ছাসত্ত্বেও মা আটা মাখা হাতে কনুই দিয়ে বাচ্চাকে দূরে সরিয়ে দেয়। মা সন্তানকে তার প্রথম সংস্কার দেন : কখন সে মায়ের কোলে আসবে এবং কখন আসার জন্য বায়না করবে না। মা এই সঠিক সময়ের নিয়মনিষ্ঠা, শিশুর সংস্কৃতিতে রোপন করেন।শ্রী ভগবান বলেন যে এই চতুর্ভুজ রূপ প্রাপ্ত করতে হলে শৈশবের সেই নির্মলতা ও পবিত্রতা পুনঃ প্রাপ্ত করা আবশ্যিক। তার জন্য একমাত্র উপায় হল নিজের অহম্ এবং অহংকারকে সম্পূর্ণরূপে বিসর্জিত করে দেওয়া।

একটি শিশু যখন জন্ম নেয় তখন তার মধ্যে অহং বা অহংকার থাকে না, সেই স্থান শূন্য অবস্থায় থাকে। তারপর যেমন যেমন শিশুটি বড় হয়, সর্বপ্রথম মা তার মধ্যে মূল্যবোধের বীজ বপন করেন। মা যখন রান্নাঘরে রান্না করছে, তখন সন্তান মায়ের কোলে যেতে চায়। অনিচ্ছাসত্ত্বেও মা আটা মাখা হাতে কনুই দিয়ে বাচ্চাকে দূরে সরিয়ে দেয়। মা সন্তানকে তার প্রথম সংস্কার দেন : কখন সে মায়ের কোলে আসবে এবং কখন আসার জন্য বায়না করবে না। মা এই সঠিক সময়ের নিয়মনিষ্ঠা, শিশুর সংস্কৃতিতে রোপন করেন।
শ্রী ভগবান বলেন যে এই চতুর্ভুজ রূপ প্রাপ্ত করতে হলে শৈশবের সেই নির্মলতা ও পবিত্রতা পুনঃ প্রাপ্ত করা আবশ্যিক। তার জন্য একমাত্র উপায় হল নিজের অহম্ এবং অহংকারকে সম্পূর্ণরূপে বিসর্জিত করে দেওয়া।
একটি শিশু যখন জন্ম নেয় তখন তার মধ্যে অহং বা অহংকার থাকে না, সেই স্থান শূন্য অবস্থায় থাকে। তারপর যেমন যেমন শিশুটি বড় হয়, সর্বপ্রথম মা তার মধ্যে মূল্যবোধের বীজ বপন করেন। মা যখন রান্নাঘরে রান্না করছে, তখন সন্তান মায়ের কোলে যেতে চায়। অনিচ্ছাসত্ত্বেও মা আটা মাখা হাতে কনুই দিয়ে বাচ্চাকে দূরে সরিয়ে দেয়। মা সন্তানকে তার প্রথম সংস্কার দেন : কখন সে মায়ের কোলে আসবে এবং কখন আসার জন্য বায়না করবে না। মা এই সঠিক সময়ের নিয়মনিষ্ঠা, শিশুর সংস্কৃতিতে রোপন করেন।
শ্রী ভগবান বলেন যে এই চতুর্ভুজ রূপ প্রাপ্ত করতে হলে শৈশবের সেই নির্মলতা ও পবিত্রতা পুনঃ প্রাপ্ত করা আবশ্যিক। তার জন্য একমাত্র উপায় হল নিজের অহম্ এবং অহংকারকে সম্পূর্ণরূপে বিসর্জিত করে দেওয়া।
মত্কর্মকৃন্মত্পরমো, মদ্ভক্তঃ(স্) সঙ্গবর্জিতঃ
নির্বৈরঃ(স্) সর্বভূতেষু, য়ঃ(স্) স মামেতি পাংডব॥55॥
হে অর্জুন ! যে-ব্যক্তি আমারই জন্য সমস্ত কর্ম করেন, আমার পরায়ণ হন, আমার ভক্ত হন, আসক্তিশূন্য হন এবং সমস্ত প্রাণীতে বৈরভাব শূন্য হন,—সেই অনন্য ভক্তিযুক্ত পুরুষ আমাকেই প্রাপ্ত হন।
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ, যে তাঁর অনন্য ভক্ত, তার লক্ষণগুলি অর্জুনকে বললেন। প্রথমত, সেই ভক্ত হলো অজাতশত্রু এবং জগতের কারও সঙ্গে তার কোনো প্রকার শত্রুতা থাকে না। সমস্ত প্রাণীর সাথে তার প্রগাঢ় প্রেমময় সম্পর্ক আছে।
সেই ভক্তের সমস্ত কর্মই আমার মধ্যেই সম্পূর্ণতা পায়। সেই ভক্ত যখন রান্নাঘরে রান্না করছেন, তিনি শুধুমাত্র রান্না করছেন না, তিনি আমার জন্য ভোগ তৈরি করছেন, তিনি আমাকে অর্পণ করার জন্য নৈবেদ্য প্রস্তুত করছেন,এই ভাব নিয়ে রান্না করছেন। যখন তিনি বাড়িতে ঝাড়ু লাগাচ্ছেন, তখনও তিনি আমারই প্রাঙ্গন পরিষ্কার করছেন, এই ভাব নিয়েই কাজটি করছেন।
সেই ভক্ত স্বয়নে-স্বপনে ভগবানকেই দেখতে পান। ঘুম থেকে ওঠার সময়ও তিনি ভগবানকে প্রত্যক্ষ দর্শন করেন। তার ঘুমও তার জন্য সমাধি হয়ে যায়।
তিনি উঠতে, বসতে, হাঁটা-চলার সময়, অফিসে বা কাজের জায়গায় আসা-যাওয়ার সময়, সর্বদা মনে এই অনুভূতি জাগ্রত রাখেন যে তিনি ভগবানের প্রদক্ষিণ করছেন।
এই ধরনের ভক্ত কামনা-বাসনা, আসক্তিভাব ইত্যাদি বিসর্জন করে সম্পূর্ণরূপে নিজেকে সমর্পিত করে আমার এই চতুর্ভুজ রূপের সাথে একাকার হয়ে যায়।
এই ভজন গাওয়ার মধ্য দিয়ে আজকের এই ভক্তিময় ও জ্ঞানময় সত্রের সমাপ্তি হয়।
এর সাথেই আজকের এই জ্ঞানময় অধ্যায়ের সমাপন হলো।
সেই ভক্তের সমস্ত কর্মই আমার মধ্যেই সম্পূর্ণতা পায়। সেই ভক্ত যখন রান্নাঘরে রান্না করছেন, তিনি শুধুমাত্র রান্না করছেন না, তিনি আমার জন্য ভোগ তৈরি করছেন, তিনি আমাকে অর্পণ করার জন্য নৈবেদ্য প্রস্তুত করছেন,এই ভাব নিয়ে রান্না করছেন। যখন তিনি বাড়িতে ঝাড়ু লাগাচ্ছেন, তখনও তিনি আমারই প্রাঙ্গন পরিষ্কার করছেন, এই ভাব নিয়েই কাজটি করছেন।
সেই ভক্ত স্বয়নে-স্বপনে ভগবানকেই দেখতে পান। ঘুম থেকে ওঠার সময়ও তিনি ভগবানকে প্রত্যক্ষ দর্শন করেন। তার ঘুমও তার জন্য সমাধি হয়ে যায়।
आत्मा त्वं गिरिजा मति: सहचरा: प्राणा: शरीरं गृहम्
पूजा ते विषयोपभोगरचना निद्रा समाधिस्थिति:।
पूजा ते विषयोपभोगरचना निद्रा समाधिस्थिति:।
তিনি উঠতে, বসতে, হাঁটা-চলার সময়, অফিসে বা কাজের জায়গায় আসা-যাওয়ার সময়, সর্বদা মনে এই অনুভূতি জাগ্রত রাখেন যে তিনি ভগবানের প্রদক্ষিণ করছেন।
संचार पड्यो प्रदक्षिणा विधि स्तोत्राणि सर्वांगिरी
यद्यत् कर्म करोमि ताट्ठ दखिलम् शम्भो तावर्द्धनम्।
यद्यत् कर्म करोमि ताट्ठ दखिलम् शम्भो तावर्द्धनम्।
এই ধরনের ভক্ত কামনা-বাসনা, আসক্তিভাব ইত্যাদি বিসর্জন করে সম্পূর্ণরূপে নিজেকে সমর্পিত করে আমার এই চতুর্ভুজ রূপের সাথে একাকার হয়ে যায়।
এই ভজন গাওয়ার মধ্য দিয়ে আজকের এই ভক্তিময় ও জ্ঞানময় সত্রের সমাপ্তি হয়।
कर प्रणाम तेरे चरणों में,
करता हूँ अब तेरे काज,
पालन करने को आज्ञा तेरी,
नियुक्त होता हूँ मैं आज,
अन्तर में स्थित रहकर मेरे,
बागडोर पकड़े रहना,
निपट निरंकुश चंचल मन को,
सावधान करते रहना,
अन्तर्यामी को अन्त स्थित देख,
सशंकित होवे मन,
पाप वासना उठते ही हो,
नाश लाज से वह जलभुन,
जीवों का कलरव जो,
दिनभर सुनने में मेरे आवे,
तेरा ही गुणगान जान,
मन प्रमुदित हो अति सुख पावे,
तू ही है सर्वत्र व्याप्त हरि,
तुझमें सारा यह संसार,
इसी भावना से अंतर भर,
मिलूँ सभी से तुझे निहार,
प्रतिपल निज इन्द्रिय समूह से,
जो कुछ भी आचार करूँ,
केवल तुझे रिझाने को बस,
तेरा ही व्यवहार करूँ,
कर प्रणाम तेरे चरणों में,
करता हूँ अब तेरे काज,
पालन करने को आज्ञा तेरी,
नियुक्त होता हूँ मैं आज।
करता हूँ अब तेरे काज,
पालन करने को आज्ञा तेरी,
नियुक्त होता हूँ मैं आज,
अन्तर में स्थित रहकर मेरे,
बागडोर पकड़े रहना,
निपट निरंकुश चंचल मन को,
सावधान करते रहना,
अन्तर्यामी को अन्त स्थित देख,
सशंकित होवे मन,
पाप वासना उठते ही हो,
नाश लाज से वह जलभुन,
जीवों का कलरव जो,
दिनभर सुनने में मेरे आवे,
तेरा ही गुणगान जान,
मन प्रमुदित हो अति सुख पावे,
तू ही है सर्वत्र व्याप्त हरि,
तुझमें सारा यह संसार,
इसी भावना से अंतर भर,
मिलूँ सभी से तुझे निहार,
प्रतिपल निज इन्द्रिय समूह से,
जो कुछ भी आचार करूँ,
केवल तुझे रिझाने को बस,
तेरा ही व्यवहार करूँ,
कर प्रणाम तेरे चरणों में,
करता हूँ अब तेरे काज,
पालन करने को आज्ञा तेरी,
नियुक्त होता हूँ मैं आज।
এর সাথেই আজকের এই জ্ঞানময় অধ্যায়ের সমাপন হলো।
ॐ তৎসদিতি শ্রীমদ্ভগবদ্গীতাসু উপনিষৎসু ব্রহ্মবিদ্যায়াং(ম্) যোগশাস্ত্রে শ্রীকৃষ্ণার্জুন সম্বাদে বিশ্বরূপদর্শনযোগো নামৈকেদাশোধ্যায়ঃ।
এইভাবে ॐ তৎ সত - এই ভগবানের নামের উচ্চারণের সাথে ব্রহ্মবিদ্যা ও যোগশাস্ত্রময় শ্রীমদ্ভগবদ্গীতোপনিষদরূপ শ্রীকৃষ্ণার্জুন সম্বাদের 'বিশ্বরূপদর্শনযোগ' নামক একাদশ অধ্যায় সম্পন্ন হয়।