विवेचन सारांश
আসুরী গুণ থেকে রক্ষা পেতে সগুণের অভ্যাস
দীপ প্রজ্জ্বলন, প্রার্থনা এবং গুরু বন্দনা দ্বারা ষোড়শ অধ্যায়ের শেষাংশ বিবেচন শুরু হলো। গীতা হলো অদ্ভুত এক সংগীত যা অস্থির, বিষণ্ণ জীবাত্মা কে এখনও শান্তি ও প্রসন্নতা দান করে।
শ্রীমদ্ভাগবদগীতা পাঁচ হাজার বছর অতিক্রম করে ফেলেছে, মানুষের জীবন বদলে গেছে, ভৌগোলিক মানচিত্র বদলে গেছে, বিজ্ঞানের প্রভূত উন্নতি হয়েছে... সাথে সাথে মানুষের বিষণ্ণতা, হতাশা ও বেড়েছে। সেই অবসাদ, হতাশা দূর করে এই গীতা। শ্রী ভগবান নিজ মুখে বিষাদগ্রস্ত অর্জুন কে যে উপদেশ দিয়ে কর্মবিমুখতা থেকে আপন কর্তব্য পালনে নিয়োজিত করেছিলেন। এখনও, এই যুগেও গীতার অধ্যয়ন মানুষ কে সঠিক পথের সন্ধান দেয়, আপন কর্তব্যের প্রতি সচেতন করে।
অসত্য থেকে সত্যের দিকে অন্ধকার রূপ অজ্ঞানতা থেকে জ্ঞান রূপ জীবন প্রাপ্ত করা এবং মৃত্যু ছাড়িয়ে অমৃতত্ত্ব প্রাপ্ত করা অর্থাৎ আপন অবিনশ্বর স্বরূপ প্রাপ্ত করাই মানুষ জীবনের লক্ষ্য হওয়া উচিৎ।
কারণ, মানুষই একমাত্র প্রাণী যে বুদ্ধিসহ কাজ করে।
ভগবান বুদ্ধি কে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েছন। যুক্তি দ্বারা ভগবানের কাছে পৌঁছানো এবং ভক্তি দ্বারা ভগবান প্রাপ্ত করা। এইপ্রকার পুরুষোত্তম যোগ কিভাবে জীবনে আনা সম্ভব তার প্রচেষ্টা করতে হবে আর, এর জন্য কিছু গুণ নিজের মধ্যে ধারণ করতে হবে। এই গুণ সমূহ কে ভগবান দৈবীসম্পদ বলেছেন।
পৃথিবীতে যাঁরা মহান, তাঁরা সকলেই নিজের ভিতর কিছু দৈবী গুণ ধারণ করেছেন। কিছু মানুষ, যেমন - আমেরিকার ভূতপূর্ব প্রেসিডেন্ট রুজভেল্ট তো সদ্ গুণের একটা লিস্ট তৈরি করেছিলেন। সকালে সংকল্প করতেন সেই গুণ অনুযায়ী চলার এবং রাত্রে হিসাব করতেন যে কত শতাংশ তিনি মানতে পেরেছেন ... এইভাবে যদি সদ্ গুণের আধার নিজের মধ্যে তৈরি করে, প্রাত্যহিক জীবনে এর প্রয়োগ করা যায়, তা সমাজের জন্য অত্যন্ত মঙ্গলজনক হবে। সদগুরু রামদাস জী বলতেন... রঘুনাথ অর্থাৎ, শ্রীরামচন্দ্র সদগুনের খনি। রামচন্দ্রের সম্পূর্ণ জীবন গুণমণ্ডিত। তাঁব পূজা এইজন্য করা উচিত, যাতে তাঁব গুণের সামান্য কিছু ও প্রাপ্ত করা যায়। এজন্য মনন ও চিন্তন কে অধিক প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
শ্রী ভগবান এক এক করে ছাব্বিশ টি সদ্ গুণের কথা বলেছেন। এরপর কোন কোন গুণ পরিত্যাগ করা উচিত, তা ও বলেছেন। মানুষের ভিতরের আসুরী প্রবৃত্তির আধারের বিশ্লেষণ করেছেন। কি পরিত্যাগ করতে হবে বা কি ত্যাগ করার প্রয়োজন নেই তার ব্যাখ্যা ও করেছেন। আমরা দৈবগুণ ও আসুরী গুণ দুয়ের মধ্যেই যুক্ত রয়েছি। কিন্তু আমাদের সচেতন থাকতে হবে কোন অসদগুণ আমাদের পরিত্যাগ করতে হবে, যার দ্বারা আমাদের জীবন পথ উন্নত হয়।
অসুর প্রকৃতির লোকজন কেবল চিন্তা করে কিভাবে অন্যদের অমঙ্গল সাধন করা যায়। এরা এটাই ভাবে যে, সংসার কেবলমাত্র নারী পুরুষের সম্পর্কেই সীমাবদ্ধ। না তাদের ধারণা আছে কোন ভগবান আর না আছে কোন জগৎ নিয়ন্ত্রক। যারা এভাবে ভগবান কে অস্বীকার করে, তাদের সম্পর্কে শ্রীভগবান এই অধ্যায়ের নবম শ্লোকে বলেছেন ---
শ্রীমদ্ভাগবদগীতা পাঁচ হাজার বছর অতিক্রম করে ফেলেছে, মানুষের জীবন বদলে গেছে, ভৌগোলিক মানচিত্র বদলে গেছে, বিজ্ঞানের প্রভূত উন্নতি হয়েছে... সাথে সাথে মানুষের বিষণ্ণতা, হতাশা ও বেড়েছে। সেই অবসাদ, হতাশা দূর করে এই গীতা। শ্রী ভগবান নিজ মুখে বিষাদগ্রস্ত অর্জুন কে যে উপদেশ দিয়ে কর্মবিমুখতা থেকে আপন কর্তব্য পালনে নিয়োজিত করেছিলেন। এখনও, এই যুগেও গীতার অধ্যয়ন মানুষ কে সঠিক পথের সন্ধান দেয়, আপন কর্তব্যের প্রতি সচেতন করে।
অসতো মা সদ্গময়
তমসো মা জ্যোতির্গময়
মৃত্যোর্মা অমৃতমগময়।।
তমসো মা জ্যোতির্গময়
মৃত্যোর্মা অমৃতমগময়।।
অসত্য থেকে সত্যের দিকে অন্ধকার রূপ অজ্ঞানতা থেকে জ্ঞান রূপ জীবন প্রাপ্ত করা এবং মৃত্যু ছাড়িয়ে অমৃতত্ত্ব প্রাপ্ত করা অর্থাৎ আপন অবিনশ্বর স্বরূপ প্রাপ্ত করাই মানুষ জীবনের লক্ষ্য হওয়া উচিৎ।
কারণ, মানুষই একমাত্র প্রাণী যে বুদ্ধিসহ কাজ করে।
বুদ্ধিয়ুক্তো জহাতীহ, উভে সুকৃতদুষ্কৃতে।
ভগবান বুদ্ধি কে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েছন। যুক্তি দ্বারা ভগবানের কাছে পৌঁছানো এবং ভক্তি দ্বারা ভগবান প্রাপ্ত করা। এইপ্রকার পুরুষোত্তম যোগ কিভাবে জীবনে আনা সম্ভব তার প্রচেষ্টা করতে হবে আর, এর জন্য কিছু গুণ নিজের মধ্যে ধারণ করতে হবে। এই গুণ সমূহ কে ভগবান দৈবীসম্পদ বলেছেন।
পৃথিবীতে যাঁরা মহান, তাঁরা সকলেই নিজের ভিতর কিছু দৈবী গুণ ধারণ করেছেন। কিছু মানুষ, যেমন - আমেরিকার ভূতপূর্ব প্রেসিডেন্ট রুজভেল্ট তো সদ্ গুণের একটা লিস্ট তৈরি করেছিলেন। সকালে সংকল্প করতেন সেই গুণ অনুযায়ী চলার এবং রাত্রে হিসাব করতেন যে কত শতাংশ তিনি মানতে পেরেছেন ... এইভাবে যদি সদ্ গুণের আধার নিজের মধ্যে তৈরি করে, প্রাত্যহিক জীবনে এর প্রয়োগ করা যায়, তা সমাজের জন্য অত্যন্ত মঙ্গলজনক হবে। সদগুরু রামদাস জী বলতেন... রঘুনাথ অর্থাৎ, শ্রীরামচন্দ্র সদগুনের খনি। রামচন্দ্রের সম্পূর্ণ জীবন গুণমণ্ডিত। তাঁব পূজা এইজন্য করা উচিত, যাতে তাঁব গুণের সামান্য কিছু ও প্রাপ্ত করা যায়। এজন্য মনন ও চিন্তন কে অধিক প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
শ্রী ভগবান এক এক করে ছাব্বিশ টি সদ্ গুণের কথা বলেছেন। এরপর কোন কোন গুণ পরিত্যাগ করা উচিত, তা ও বলেছেন। মানুষের ভিতরের আসুরী প্রবৃত্তির আধারের বিশ্লেষণ করেছেন। কি পরিত্যাগ করতে হবে বা কি ত্যাগ করার প্রয়োজন নেই তার ব্যাখ্যা ও করেছেন। আমরা দৈবগুণ ও আসুরী গুণ দুয়ের মধ্যেই যুক্ত রয়েছি। কিন্তু আমাদের সচেতন থাকতে হবে কোন অসদগুণ আমাদের পরিত্যাগ করতে হবে, যার দ্বারা আমাদের জীবন পথ উন্নত হয়।
অসুর প্রকৃতির লোকজন কেবল চিন্তা করে কিভাবে অন্যদের অমঙ্গল সাধন করা যায়। এরা এটাই ভাবে যে, সংসার কেবলমাত্র নারী পুরুষের সম্পর্কেই সীমাবদ্ধ। না তাদের ধারণা আছে কোন ভগবান আর না আছে কোন জগৎ নিয়ন্ত্রক। যারা এভাবে ভগবান কে অস্বীকার করে, তাদের সম্পর্কে শ্রীভগবান এই অধ্যায়ের নবম শ্লোকে বলেছেন ---
16.9
এতাং(ন্) দৃষ্টিমবষ্টভ্য, নষ্টাত্মানোল্পবুদ্ধয়ঃ৷
প্রভবন্ত্যুগ্রকর্মাণঃ, ক্ষয়ায় জগতোহিতাঃ৷৷9৷৷
এইরূপ মিথ্যা জ্ঞান অবলম্বন করে বিকৃত স্বভাব এবং মন্দবুদ্ধিসম্পন্ন, অহিতকারী ক্রূরকর্মা ব্যক্তিগণ জগতের বিনাশের জন্য জন্মগ্রহণ করে।
শ্রী ভগবান বলেছেন যে মানুষেরা ভুল সিদ্ধান্ত নেয় এবং ভুল ধারণার প্রচার করে -- যা দ্বারা কিছু মানুষ বিভ্রান্ত হয়ে সেটাকেই সত্য বলে মেনে নেয় --- এই ধরনের মিথ্যায় বিশ্বাসীরা অল্পবুদ্ধি বা মন্দবুদ্ধি। এই ধরনের মানুষ সৃষ্টির অহিতসাধন করে -- অর্থাৎ সৃষ্টির জন্য অমঙ্গলকারী।
নিজ সম্পত্তির পরিসীমাই হোক বা ক্ষমতার --- এরা নিরীহ মানুষ কে নাশ করতে পারে। চরমপন্থীরা জগতের অনিষ্ট করাকে আপন ধর্ম মনে করে। এরা অন্যদের কষ্ট দিয়ে আনন্দ পায়। এদের লক্ষ্য হলো -- খায়ো, পিয়ো, মৌজ করো। নিজের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য এরা সবকিছু করতে পারে। শাস্ত্রেও এদের বর্ণনা আছে।
নিজ সম্পত্তির পরিসীমাই হোক বা ক্ষমতার --- এরা নিরীহ মানুষ কে নাশ করতে পারে। চরমপন্থীরা জগতের অনিষ্ট করাকে আপন ধর্ম মনে করে। এরা অন্যদের কষ্ট দিয়ে আনন্দ পায়। এদের লক্ষ্য হলো -- খায়ো, পিয়ো, মৌজ করো। নিজের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য এরা সবকিছু করতে পারে। শাস্ত্রেও এদের বর্ণনা আছে।
কামমাশ্রিত্য দুষ্পূরং(ন্), দম্ভমানমদান্বিতাঃ৷
মোহাদ্গৃহীত্বাসদ্গ্ৰাহান্ প্রবর্তন্তেশুচিব্রতাঃ৷৷10৷৷
এইসব দুম্পূরণীয় বাসনায় পূর্ণ, দম্ভ, অভিমান ও মদযুক্ত মানুষেরা অজ্ঞানবশতঃ অশুচি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ভ্রষ্টাচারে প্রবৃত্ত হয়ে সংসারে বিচরণ করে।
শ্রীভগবান বলেছেন -- হে অর্জুন! যে মানুষ অপূর্ণ আকাঙ্খার বশীভূত হয়ে কাজ করে, তারা অবশ্যই আসুরী প্রবৃত্তির।
গুলজার সাহেবের খুব সুন্দর একটা পংক্তি আছে --
कामनाएँ बेवफा होती हैं, पूरी होते ही बदल जाती हैं ।
অর্থাৎ মানুষ একটা কামনা পূর্ণ করার চেষ্টা করে এবং তা পূর্ণ হওয়ার পরেই অন্য কোন কামনায় জড়িয়ে যায়। কামনা ও লক্ষ্য দুটো ব্যাপার এক নয়। কামনা অনাবশ্যক ইচ্ছা পূরণের জন্য জেগে ওঠে। কিন্তু, লক্ষ্য একটা নির্দিষ্ট দিকে থাকে। যেমন, একজন বৈজ্ঞানিকের লক্ষ্য থাকে নতুন কিছু আবিষ্কারের দিকে, একজন খেলোয়াড়ের লক্ষ্য থাকে তার দক্ষতা বাড়ানোর দিকে। সপ্তম অধ্যায়ে শ্রী ভগবান বলেছেন --
অর্থাৎ, শ্রীভগবান বলেছেন -- ধর্মসম্মত ভাবে যে কাজ করা হয় -- তা আমার স্বরূপ। জীবনের লক্ষ্য হলো মানুষের উপকার করা এবং এইরূপ ধারণা যার আছে সে-ই ব্রহ্মস্বরূপ। আবার এর বিপরীত দিকে যে কামনার বশে অনেক কিছু করতে চায়, তার জীবন শেষ হয়ে যায়। আকাঙ্ক্ষার মোহে বদ্ধ থাকা হলো অজ্ঞানতার দিকে এগিয়ে যাওয়া।
এই অজ্ঞানতা আবার দুই রকম -- আবরণ ও বিক্ষেপ। আবরণ - যা জ্ঞান কে ঢেকে রাখে এবং বিক্ষেপ হলো জেনে-বুঝে ভুল কে ঠিক বলে নিজের আচরণে প্রতিষ্ঠা করা এবং ভ্রষ্টাচার বাড়িয়ে তুলে সেটাকেই শিষ্টাচার হিসাবে প্রচার করা। একজন দুরাচারী ই এইরকম দুর্নীতির বশবর্তী হয়। ধন উপার্জন এবং সঞ্চয় ততটাই করা উচিৎ যতটা প্রয়োজন।
কোন একসময় এক ব্যক্তি বরপ্রাপ্তির উদ্দেশ্যে ভগবানের পূজা করতো.... ভগবান কে তুষ্ট করার চেষ্টা করতো। ভগবান প্রসন্ন হয়ে তাকে বর দিতে চাইলেন। সে তো তার সকল কামনা পূরণের বর চাইলো। ভগবান তাকে তার তিনটি কামনা পূর্ণ করার বর চাইতে বললেন এবং সাথে এ ও বললেন তুমি যা প্রাপ্ত করবে, তোমার প্রতিবেশী তার দ্বিগুণ প্রাপ্ত করবে। একথায় সেই ব্যক্তি খুবই বিচলিত হয়ে পড়লো এবং সে বর চাইলো যেন তার একটা চোখ খারাপ হয়ে যায়। কারণ, এর ফলে তার প্রতিবেশী পুরো অন্ধ হয়ে যাবে। এইরকম যার মনোভাব, সে অবশ্য ই আসুরী প্রকৃতির।
গুলজার সাহেবের খুব সুন্দর একটা পংক্তি আছে --
कामनाएँ बेवफा होती हैं, पूरी होते ही बदल जाती हैं ।
অর্থাৎ মানুষ একটা কামনা পূর্ণ করার চেষ্টা করে এবং তা পূর্ণ হওয়ার পরেই অন্য কোন কামনায় জড়িয়ে যায়। কামনা ও লক্ষ্য দুটো ব্যাপার এক নয়। কামনা অনাবশ্যক ইচ্ছা পূরণের জন্য জেগে ওঠে। কিন্তু, লক্ষ্য একটা নির্দিষ্ট দিকে থাকে। যেমন, একজন বৈজ্ঞানিকের লক্ষ্য থাকে নতুন কিছু আবিষ্কারের দিকে, একজন খেলোয়াড়ের লক্ষ্য থাকে তার দক্ষতা বাড়ানোর দিকে। সপ্তম অধ্যায়ে শ্রী ভগবান বলেছেন --
বলং বলবতাং চাহং, কামরাগবিবর্জিতম্।
ধর্মাবিরুদ্ধো ভূতেষু, কামোऽস্মি ভরতর্ষভ।।
ধর্মাবিরুদ্ধো ভূতেষু, কামোऽস্মি ভরতর্ষভ।।
অর্থাৎ, শ্রীভগবান বলেছেন -- ধর্মসম্মত ভাবে যে কাজ করা হয় -- তা আমার স্বরূপ। জীবনের লক্ষ্য হলো মানুষের উপকার করা এবং এইরূপ ধারণা যার আছে সে-ই ব্রহ্মস্বরূপ। আবার এর বিপরীত দিকে যে কামনার বশে অনেক কিছু করতে চায়, তার জীবন শেষ হয়ে যায়। আকাঙ্ক্ষার মোহে বদ্ধ থাকা হলো অজ্ঞানতার দিকে এগিয়ে যাওয়া।
এই অজ্ঞানতা আবার দুই রকম -- আবরণ ও বিক্ষেপ। আবরণ - যা জ্ঞান কে ঢেকে রাখে এবং বিক্ষেপ হলো জেনে-বুঝে ভুল কে ঠিক বলে নিজের আচরণে প্রতিষ্ঠা করা এবং ভ্রষ্টাচার বাড়িয়ে তুলে সেটাকেই শিষ্টাচার হিসাবে প্রচার করা। একজন দুরাচারী ই এইরকম দুর্নীতির বশবর্তী হয়। ধন উপার্জন এবং সঞ্চয় ততটাই করা উচিৎ যতটা প্রয়োজন।
কোন একসময় এক ব্যক্তি বরপ্রাপ্তির উদ্দেশ্যে ভগবানের পূজা করতো.... ভগবান কে তুষ্ট করার চেষ্টা করতো। ভগবান প্রসন্ন হয়ে তাকে বর দিতে চাইলেন। সে তো তার সকল কামনা পূরণের বর চাইলো। ভগবান তাকে তার তিনটি কামনা পূর্ণ করার বর চাইতে বললেন এবং সাথে এ ও বললেন তুমি যা প্রাপ্ত করবে, তোমার প্রতিবেশী তার দ্বিগুণ প্রাপ্ত করবে। একথায় সেই ব্যক্তি খুবই বিচলিত হয়ে পড়লো এবং সে বর চাইলো যেন তার একটা চোখ খারাপ হয়ে যায়। কারণ, এর ফলে তার প্রতিবেশী পুরো অন্ধ হয়ে যাবে। এইরকম যার মনোভাব, সে অবশ্য ই আসুরী প্রকৃতির।
চিন্তামপরিমেয়াং(ঞ) চ, প্রলয়ান্তামুপাশ্রিতাঃ৷
কামোপভোগপরমা, এতাবদিতি নিশ্চিতাঃ ৷৷11৷৷
মৃত্যুকাল পর্যন্ত এরা অসংখ্য চিন্তার আশ্রয় নিয়ে বিষয়ভোগে রত থাকে ও ‘এই-ই সুখ’ এইরূপ মনে করে থাকে।
শ্রী ভগবান বলেছেন যে এইরূপ আসুরিক প্রবৃত্তির মানুষজন ভোগ ও বস্তু প্রাপ্তির মোহে সর্বদাই সেই বিষয়ে চিন্তা করে। দেশের বা দশের দুঃসময়েও তারা শুধু নিজেদের প্রাপ্তির বা লাভের কথা ভাবে। নিজের ভোগে কোন কার্পণ্য করে না। কিন্তু, মানুষের প্রয়োজনে তাদের পাশে কখনো থাকে না।
এই প্রকৃতির মানুষের জন্য আগে বিদেশিদের কাছে ভারতবর্ষের দুর্নাম ছিল। ভারতীয়দের নিয়ে তারা উপহাস করতো। কিন্তু এখন সেই চিত্র বদল হয়েছে। ভারতীয়দের আত্মসম্মান জেগে উঠেছে। তারা নিজেদের সংস্কৃতি ও শাস্ত্র সম্পর্কে উৎসাহী এবং তা পাঠ করে আনন্দ পাচ্ছে। কিন্তু পৈশাচিক প্রবৃত্তির মানুষ তো বদলায় না। তাই এক শ্রেণীর মানুষ সমাজের ক্ষতি করেই চলেছে।
এই প্রকৃতির মানুষের জন্য আগে বিদেশিদের কাছে ভারতবর্ষের দুর্নাম ছিল। ভারতীয়দের নিয়ে তারা উপহাস করতো। কিন্তু এখন সেই চিত্র বদল হয়েছে। ভারতীয়দের আত্মসম্মান জেগে উঠেছে। তারা নিজেদের সংস্কৃতি ও শাস্ত্র সম্পর্কে উৎসাহী এবং তা পাঠ করে আনন্দ পাচ্ছে। কিন্তু পৈশাচিক প্রবৃত্তির মানুষ তো বদলায় না। তাই এক শ্রেণীর মানুষ সমাজের ক্ষতি করেই চলেছে।
আশাপাশশতৈর্বদ্ধাঃ(খ্), কামক্রোধপরায়ণাঃ৷
ঈহন্তে কামভোগার্থম্ , অন্যায়েনার্থসঞ্চয়ান্৷৷12৷৷
তারা অসংখ্য আশা অর্থাৎ কামনার জালে আবদ্ধ থেকে এবং কাম ও ক্রোধের অধীন হয়ে বিষয়ভোগের জন্য অসৎ উপায়ে অর্থ সংগ্রহে রত থাকে।
শ্রী ভগবান আসুরী প্রবৃত্তি সম্পন্ন মানুষের বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন এবং তা আমাদের নিজের অন্তরের দিকে লক্ষ্য করতে বাধ্য করে। শ্রী ভগবান বলেছেন এইরকম মানুষ কাম- ক্রোধ পরায়ণ হয় এবং নিজের কামনা পূর্তির জন্য কেবলই অর্থ সঞ্চয় করে ও আশায় বদ্ধ থাকে।
আমাদের ধর্ম অনুসারে আমাদের সংস্কৃতি ষোলো টি স্তম্ভের উপর অবস্থিত। যার মধ্যে ধর্ম,অর্থ, কাম ও মোক্ষ -- এই চারটি পুরুষার্থ, চারটি বর্ণ, চারটি আশ্রম ও চারটি সাধনের কথা বলা হয়েছে। ধর্ম ও অর্থের উপর সৃষ্টির বিকাশ নির্ভর করে। কামনা পূর্তির জন্য অর্থের প্রয়োজন, কিন্তু অর্থ প্রাপ্তি ধর্ম অনুসারে হওয়া উচিত। উল্টো পথে অর্থ অর্জন করা এবং তা প্রদর্শন করা যা দ্বারা অন্যেরাও প্রভাবিত হয়ে এমনই করতে বাধ্য হয়। এই মনোভাবের মানুষরা নিজের উপার্জনের পথে যদি কেউ বাধা দেয়, তাহলে তাকে নিধন করতে ও পিছপা হয় না।
আমাদের ধর্ম অনুসারে আমাদের সংস্কৃতি ষোলো টি স্তম্ভের উপর অবস্থিত। যার মধ্যে ধর্ম,অর্থ, কাম ও মোক্ষ -- এই চারটি পুরুষার্থ, চারটি বর্ণ, চারটি আশ্রম ও চারটি সাধনের কথা বলা হয়েছে। ধর্ম ও অর্থের উপর সৃষ্টির বিকাশ নির্ভর করে। কামনা পূর্তির জন্য অর্থের প্রয়োজন, কিন্তু অর্থ প্রাপ্তি ধর্ম অনুসারে হওয়া উচিত। উল্টো পথে অর্থ অর্জন করা এবং তা প্রদর্শন করা যা দ্বারা অন্যেরাও প্রভাবিত হয়ে এমনই করতে বাধ্য হয়। এই মনোভাবের মানুষরা নিজের উপার্জনের পথে যদি কেউ বাধা দেয়, তাহলে তাকে নিধন করতে ও পিছপা হয় না।
ইদমদ্য ময়া লব্ধম্ , ইমং(ম্) প্রাপ্স্যে মনোরথম্৷
ইদমস্তীদমপি মে, ভবিষ্যতি পুনর্ধনম্৷৷13৷৷
তারা ভাবতে থাকে যে আজ আমার এই ধন লাভ হল, ভবিষ্যতে আমার এই আশা পূরণ হবে। আমার এত ধন আছে, পরে আরও ধন লাভ হবে।
শ্রী ভগবান বলেছেন -- এই ধরনের মানুষ নিজের সঞ্চিত ভাণ্ডারের কথাই কেবল চিন্তা করে। কিভাবে আরও বেশি সঞ্চয় করা যায় -- এই চিন্তায় আচ্ছন্ন থাকে। অর্থ উপার্জন করা আবশ্যক কিন্তু অতিরিক্ত অর্থের আকাঙ্খাই আসুরিক প্রবৃত্তি কে জাগিয়ে তোলে। আজ যতটা প্রাপ্ত করেছি --- তার কয়েক গুণ বেশি প্রাপ্ত করার লালসা বাড়তে থাকে।
সন্ত জ্ঞানেশ্বর মহারাজ খুব সুন্দর বলেছেন --
"विश्वाचे सारे धन, त्याचा मीच स्वामी होइन"।
- আসুরী প্রবৃত্তির মানুষ অন্যের ধন ও নিজের সঞ্চয়ে রাখতে চায় , অন্যের সম্পত্তি দখল করতে চায়, অন্যদের বিনাশ করতে চায়।
জ্ঞানেশ্বর মহারাজ আরও বলেছেন --
*वक्रदृष्टि ज्यावर टाकीन नाश त्याचा होईल"।*
- এই জগৎ বিকার দ্বারা গঠিত এবং যদি কেউ নিজের কামনা হেতু তরবারির ফলায় নিজের ধর্ম প্রচার করে -- তাহলে তার পতন নিশ্চিত। কারণ, তার ইচ্ছা আপন স্বার্থের উপর নির্ভর করে রয়েছে।
সন্ত জ্ঞানেশ্বর মহারাজ খুব সুন্দর বলেছেন --
"विश्वाचे सारे धन, त्याचा मीच स्वामी होइन"।
- আসুরী প্রবৃত্তির মানুষ অন্যের ধন ও নিজের সঞ্চয়ে রাখতে চায় , অন্যের সম্পত্তি দখল করতে চায়, অন্যদের বিনাশ করতে চায়।
জ্ঞানেশ্বর মহারাজ আরও বলেছেন --
*वक्रदृष्टि ज्यावर टाकीन नाश त्याचा होईल"।*
- এই জগৎ বিকার দ্বারা গঠিত এবং যদি কেউ নিজের কামনা হেতু তরবারির ফলায় নিজের ধর্ম প্রচার করে -- তাহলে তার পতন নিশ্চিত। কারণ, তার ইচ্ছা আপন স্বার্থের উপর নির্ভর করে রয়েছে।
অসৌ ময়া হতঃ(শ্) শত্রুঃ(র্) , হর্নিষ্যে চাপরানপি৷
ঈশ্বরোহমহং(ম্) ভোগী, সিদ্ধোহং(ম্) বলবান্ সুখী ৷৷14৷৷
সেই দুর্জয় শত্রুকে আমি নাশ করছি, এইবার অন্যান্যদেরও নাশ করব। আমি ঈশ্বর, আমি ভোগী। আমি পুরুষার্থসম্পন্ন, বলবান এবং সুখী।
আসুরী প্রবৃত্তির মানুষ ভাবে... তার পথে বাধা হয়ে যা কিছু আসবে সবকিছুই সে নাশ করে দেবে। নিজেকে ঈশ্বর ভেবে ফেলে। ইতিহাসে এরকম উদাহরণ আছে। হিটলার, সাদ্দাম হোসেন -- তারাও নিজেদের ঈশ্বর ভাবতো... সকলের নিয়ন্ত্রক ভাবতো। নিজেদের কামনা পূর্তির জন্য নিরপরাধ মানুষের উপর সাংঘাতিক অত্যাচার করেছে - হত্যা করেছে -- শেষে তাদেরও বিনাশ হয়েছে।
আজকের যুগে আসুরী গুণ সমন্বিত মানুষ চার প্রকার M সম্পন্ন। সেগুলো হলো --
थोड़े वैरी मारले आजवरी आणिकही मारीन यावरी। मग एकटाच मी या भूवरी गौरवाने नांदेन। जेवढे राहतील माझ्या सेवेत त्याहून निचरा करेन समाप्त। या चराचर विश्वात मीच एक इश्वर ।।
- অর্থাৎ -- আমার রাস্তায় যে আসবে তাকেই মেরে দেবো... এই মনোভাবের মানুষ তার স্তাবকতা করে যারা, তাদের ছাড়া অন্য সবাই কে নিজের শত্র ভাবে এবং কাউকে পরোয়া করে না । নিজেকে স্বয়ং ঈশ্বর ভাবে ।
আজকের যুগে আসুরী গুণ সমন্বিত মানুষ চার প্রকার M সম্পন্ন। সেগুলো হলো --
- Money
- Men
- Muscle
- Media
थोड़े वैरी मारले आजवरी आणिकही मारीन यावरी। मग एकटाच मी या भूवरी गौरवाने नांदेन। जेवढे राहतील माझ्या सेवेत त्याहून निचरा करेन समाप्त। या चराचर विश्वात मीच एक इश्वर ।।
- অর্থাৎ -- আমার রাস্তায় যে আসবে তাকেই মেরে দেবো... এই মনোভাবের মানুষ তার স্তাবকতা করে যারা, তাদের ছাড়া অন্য সবাই কে নিজের শত্র ভাবে এবং কাউকে পরোয়া করে না । নিজেকে স্বয়ং ঈশ্বর ভাবে ।
আঢ্যোভিজনবানস্মি, কোন্যোস্তি সদৃশো ময়া ৷
যক্ষ্যে দাস্যামি মোদিষ্য, ইত্যজ্ঞানবিমোহিতাঃ৷৷15৷৷
আমি অত্যন্ত ধনী এবং অনেক আত্মীয়-স্বজন পরিবেষ্টিত, আমার মতো আর কে আছে ? আমি যজ্ঞ করব, দান করব, আমোদ-প্রমোদ করব।
অনেকচিত্তবিভ্রান্তা, মোহজালসমাবৃতাঃ৷
প্রসক্তাঃ(খ্) কামভোগেষু, পতন্তি নরকেশুচৌ৷৷16৷৷
এইপ্রকার অজ্ঞ, মোহগ্রস্ত এবং নানাভাবে বিভ্রান্তচিত্ত মোহজাল সমাবৃত এবং বিষয়ভোগে অত্যধিক আসক্ত আসুরী প্রকৃতির ব্যক্তিগণ ভয়ানক অপবিত্র নরকে পতিত হয়।
অহংকারময় ভোগী নিজের কামনা পূর্ণ করার জন্য আকুল হয়ে এমন যজ্ঞ করে, যাতে সকলেই তার গুনগান করে । বাহাদুরি পাওয়ার জন্য বড়ো বড়ো কাজ করতে চায়, দেখিয়ে দেখিয়ে দানধ্যান করে এবং এভাবে আরও বেশি করে মোহজালে আবদ্ধ হয়ে যায়। সে অজ্ঞানতার অন্ধকারে আরও তলিয়ে যায় এবং কামনা বাসনাগ্রস্ত হয়ে যায়। এরকম বিষয়ভোগী মানুষ অন্তিমে ভয়ংকর নরকে পতিত হয়।
স্বর্গ -নরক আসলে কি?
এর উত্তর শ্রী জ্ঞানেশ্বর মহারাজ দিয়েছেন। সাত্ত্বিক চিন্তা ভাবনার উত্থান হওয়াই স্বর্গ এবং ভোগের যতই সাধন করবে আর প্রাপ্ত করবে, তা আসলে অশান্তির অনুভব। অন্যের বস্তু দেখে তা প্রাপ্ত করার লালসা ক্রমশ অজ্ঞানতার দিকে নিয়ে যায় । এতেই নরকের দ্বার খুলে যায় ।
জ্ঞানেশ্বর মহারাজ বলেছেন... বড়লোক হওয়া ভুল নয়, কিন্তু তার সাথে বড়ো মানুষ হওয়া উচিত। গুরুজী বলেন, বড়লোক হয়ে গিয়ে অন্যদের নীচু চোখে দেখা বা অন্যদের ছোট করা পাপ এবং তা মানুষের বিনাশ ডেকে আনে।
বিদ্যা শিক্ষা নিশ্চয়ই মহৎ কাজ, কিন্তু শিক্ষার অভিমান কখনো ভালো নয়। তেমনই বড়ো হয়েও তার অভিমান ভগবানের চরণে সমর্পণ করে দেওয়া উচিত।
পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর একবার একটি স্টেশনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সেই স্টেশনে একটা ট্রেন থেকে এক দম্পতি নামলেন এবং তাদের স্যুটকেস বয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি কুলির খোঁজ করতে লাগলেন। দেশীয় পোশাক পরা বিদ্যাসাগর কে দেখে তাদের মনে হলো এ হয়তো কুলীই হবে। বিদ্যাসাগরের হাতে লাগেজ ধরিয়ে দিয়ে ঠিকানা বলে দিলেন। বিনা বাক্যে অত বড়ো পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র লাগেজ নিয়ে সঠিক জায়গায় পৌঁছে দিলেন। তাঁর মতো মহাপণ্ডিতের কোন বড়ত্বের অভিমান ছিল না, অথচ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মানুষ কত বেশি অভিমান বহন করে !!
স্বর্গ -নরক আসলে কি?
এর উত্তর শ্রী জ্ঞানেশ্বর মহারাজ দিয়েছেন। সাত্ত্বিক চিন্তা ভাবনার উত্থান হওয়াই স্বর্গ এবং ভোগের যতই সাধন করবে আর প্রাপ্ত করবে, তা আসলে অশান্তির অনুভব। অন্যের বস্তু দেখে তা প্রাপ্ত করার লালসা ক্রমশ অজ্ঞানতার দিকে নিয়ে যায় । এতেই নরকের দ্বার খুলে যায় ।
জ্ঞানেশ্বর মহারাজ বলেছেন... বড়লোক হওয়া ভুল নয়, কিন্তু তার সাথে বড়ো মানুষ হওয়া উচিত। গুরুজী বলেন, বড়লোক হয়ে গিয়ে অন্যদের নীচু চোখে দেখা বা অন্যদের ছোট করা পাপ এবং তা মানুষের বিনাশ ডেকে আনে।
বিদ্যা শিক্ষা নিশ্চয়ই মহৎ কাজ, কিন্তু শিক্ষার অভিমান কখনো ভালো নয়। তেমনই বড়ো হয়েও তার অভিমান ভগবানের চরণে সমর্পণ করে দেওয়া উচিত।
পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর একবার একটি স্টেশনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সেই স্টেশনে একটা ট্রেন থেকে এক দম্পতি নামলেন এবং তাদের স্যুটকেস বয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি কুলির খোঁজ করতে লাগলেন। দেশীয় পোশাক পরা বিদ্যাসাগর কে দেখে তাদের মনে হলো এ হয়তো কুলীই হবে। বিদ্যাসাগরের হাতে লাগেজ ধরিয়ে দিয়ে ঠিকানা বলে দিলেন। বিনা বাক্যে অত বড়ো পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র লাগেজ নিয়ে সঠিক জায়গায় পৌঁছে দিলেন। তাঁর মতো মহাপণ্ডিতের কোন বড়ত্বের অভিমান ছিল না, অথচ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মানুষ কত বেশি অভিমান বহন করে !!
আত্মসম্ভাবিতাঃ(স্) স্তব্ধা, ধনমানমদান্বিতাঃ৷
যজন্তে নামযজ্ঞৈস্তে, দম্ভেনাবিধিপূর্বকম্৷৷17৷৷
নিজেই নিজেকে শ্রেষ্ঠ মনে করে সেইসকল অহঙ্কারী ব্যক্তি ধন, মান ও গর্বের সঙ্গে অবিধিপূর্বক নামমাত্র যজ্ঞের অনুষ্ঠান করে।
আপন ধনের গর্বে মত্ত মানুষ যে নিজের প্রশংসাতেই পঞ্চমুখ হবে তাতে আর আশ্চর্যের কি আছে !! নিজের প্রশংসা করার জন্য বড়ো বড়ো কাজ করতে থাকে.... শাস্ত্রবিধি না মেনেই যজন- পূজন করে শুধুমাত্র নিজে বাহবা পাবে বলে ।
একবার ভূতপূর্ব রাষ্ট্রপতি ডক্টর রাজেন্দ্রপ্রসাদ গীতাপ্রেসের প্রতিষ্ঠাতা হনুমান প্রসাদ জী পোদ্দার কে ভারতরত্ন দেওয়ার ইচ্ছা করেছিলেন। কিন্তু তিনি বিনয়ের সাথে এইসবের সঙ্গে না জড়ানোর কথা বলেছিলেন এবং তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন.... কারণ, ওই উপাধিতে তাঁর মন অশান্ত হয়ে যাবে । কিন্তু আজকাল লোকে নামের জন্য পূজা পাঠ করে ।
মহাভারতে একটি প্রসঙ্গ আছে --- অর্জুনের অনেক সংকল্পের মধ্যে একটা ছিল যদি কেউ তাঁর গাণ্ডীব কে অপমান করে, তবে তিনি হয় তাকে হত্যা করবেন অথবা নিজেকে হত্যা করবেন।
ঘটনাক্রমে একবার অর্জুনের অনুপস্থিতিতে কর্ণ চার পাণ্ডব কে আক্রমণ করেন ও পরাজিত করেন। বিধ্বস্ত যুধিষ্ঠির অর্জুন কে দেখে রেগে গিয়ে তাঁর গাণ্ডীব কে ধিক্কার দিলেন। অর্জুন হতভম্ব হয়ে গেলেন। কি করবেন তিনি এখন। একদিকে তাঁর সংকল্প এবং অন্যদিকে তাঁর জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা। অর্জুন কে বিভ্রান্ত দেখে শ্রীকৃষ্ণ কারণ জানতে চাইলেন। সবকিছু শুনে বললেন, তুমি নিজে নিজেকে অত্যন্ত প্রশংসায় ভরিয়ে দাও। তাহলেই তোমার মৃত্যু হয়ে যাবে। অর্থাৎ, আত্ম প্রশংসা হলো মৃত্যুর সমান।
একবার ভূতপূর্ব রাষ্ট্রপতি ডক্টর রাজেন্দ্রপ্রসাদ গীতাপ্রেসের প্রতিষ্ঠাতা হনুমান প্রসাদ জী পোদ্দার কে ভারতরত্ন দেওয়ার ইচ্ছা করেছিলেন। কিন্তু তিনি বিনয়ের সাথে এইসবের সঙ্গে না জড়ানোর কথা বলেছিলেন এবং তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন.... কারণ, ওই উপাধিতে তাঁর মন অশান্ত হয়ে যাবে । কিন্তু আজকাল লোকে নামের জন্য পূজা পাঠ করে ।
মহাভারতে একটি প্রসঙ্গ আছে --- অর্জুনের অনেক সংকল্পের মধ্যে একটা ছিল যদি কেউ তাঁর গাণ্ডীব কে অপমান করে, তবে তিনি হয় তাকে হত্যা করবেন অথবা নিজেকে হত্যা করবেন।
ঘটনাক্রমে একবার অর্জুনের অনুপস্থিতিতে কর্ণ চার পাণ্ডব কে আক্রমণ করেন ও পরাজিত করেন। বিধ্বস্ত যুধিষ্ঠির অর্জুন কে দেখে রেগে গিয়ে তাঁর গাণ্ডীব কে ধিক্কার দিলেন। অর্জুন হতভম্ব হয়ে গেলেন। কি করবেন তিনি এখন। একদিকে তাঁর সংকল্প এবং অন্যদিকে তাঁর জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা। অর্জুন কে বিভ্রান্ত দেখে শ্রীকৃষ্ণ কারণ জানতে চাইলেন। সবকিছু শুনে বললেন, তুমি নিজে নিজেকে অত্যন্ত প্রশংসায় ভরিয়ে দাও। তাহলেই তোমার মৃত্যু হয়ে যাবে। অর্থাৎ, আত্ম প্রশংসা হলো মৃত্যুর সমান।
অহঙ্কারং(ম্) বলং(ন্) দর্পং(ঙ), কামং(ঙ) ক্রোধং(ঞ) চ সংশ্রিতাঃ৷
মামাত্মপরদেহেষু, প্রদ্বিষন্তোভ্যসূয়কাঃ৷৷18৷৷
অহঙ্কার, বল, দর্প, কামনা ও ক্রোধের বশবর্তী এবং অপরের নিন্দাকারী এইরূপ ব্যক্তি নিজের অপরের দেহে অন্তর্যামীরূপে অবস্থিত আমার প্রতি দ্বেষভাব পোষণ করে।
আমি -- একটি আমি হলো শুদ্ধ আমি -- যে আমি' র কথা সন্ত, মহাপুরুষেরা বলে থাকেন। আরেকটা হলো অহংকার পূর্ণ অশুদ্ধ আমি। আমিই সবকিছু এইভাবে নিজের স্তুতি করলে অভিমান আসে মনে। নিজের আকাঙ্খা পূর্ণ হলে অহংকার তৈরি হয়ে যায়, এবং পূর্ণ না হলে কাম-ক্রোধ বেড়ে যায় ... আসুরী প্রবৃত্তির জন্ম দেয়। তখন সে অন্য সকলের নিন্দা করে ---আপন অন্তরের ভগবান কে ভুলে থাকে এবং অন্যদের ভিতরেও যে ভগবানের নিবাস, তা ও ভুলে যায়। এমনকি ভগবানের ও নিন্দা করে।
শ্রীমদ্ভাগবদগীতার তৃতীয় অধ্যায়ে শ্রী ভগবান বলেছেন ---
অর্থাৎ, রজোগুণ থেকে কাম-ক্রোধের উৎপত্তি। এভাবে অন্যদের নিন্দা করে তারা আমার সাথেই বিদ্বেষ করে । ভগবান নিজের পরিচয় দিয়েছেন যে তিনিই সকলের অন্তরে বাস করেন।
পঞ্চদশ অধ্যায়ে বলেছেন --
অর্থাৎ, সকল জীবের মধ্যেই আমার অংশ আছে। তা ধর্ম, বর্ণ বা দেশ কাল নির্ভেদে। মানুষ দেশ ভাগ করে , কিন্তু ভগবানের কাছে কোন ভাগাভাগি নেই।
দশম অধ্যায়ে শ্রী ভগবান বলেছেন --
** অর্থাৎ, সব জীবের মধ্যেই আমি আছি কিন্তু, অপর কে নিন্দা করে যে মানুষ, সে আমার প্রতি বিদ্বেষ করে ... সে কিছু মানে না।
শ্রীমদ্ভাগবদগীতার তৃতীয় অধ্যায়ে শ্রী ভগবান বলেছেন ---
কাম এষ ক্রোধ এষ, রজোগুণসমুদ্ভবঃ।
মহাশনো মহাপাপ্মা, বিদ্ধ্যোনমিহ বৈরিণম্।।( ৩/২৭)
মহাশনো মহাপাপ্মা, বিদ্ধ্যোনমিহ বৈরিণম্।।( ৩/২৭)
অর্থাৎ, রজোগুণ থেকে কাম-ক্রোধের উৎপত্তি। এভাবে অন্যদের নিন্দা করে তারা আমার সাথেই বিদ্বেষ করে । ভগবান নিজের পরিচয় দিয়েছেন যে তিনিই সকলের অন্তরে বাস করেন।
পঞ্চদশ অধ্যায়ে বলেছেন --
মমৈবাংশো জীবলোকে , জীবভূতঃ সনাতনঃ।
মনঃ ষষ্ঠানীন্দ্রিয়াণি, প্রকৃতিস্থাণি কর্ষতি ।।(১৫/৭)
মনঃ ষষ্ঠানীন্দ্রিয়াণি, প্রকৃতিস্থাণি কর্ষতি ।।(১৫/৭)
অর্থাৎ, সকল জীবের মধ্যেই আমার অংশ আছে। তা ধর্ম, বর্ণ বা দেশ কাল নির্ভেদে। মানুষ দেশ ভাগ করে , কিন্তু ভগবানের কাছে কোন ভাগাভাগি নেই।
দশম অধ্যায়ে শ্রী ভগবান বলেছেন --
অহমাত্মা গুড়াকেশ, সর্বভূতাশয়স্থিতঃ।
অহমাদিশ্চ মধ্যং চ, ভূতানামস্ত এব চ ।।(১০/২০)
অহমাদিশ্চ মধ্যং চ, ভূতানামস্ত এব চ ।।(১০/২০)
** অর্থাৎ, সব জীবের মধ্যেই আমি আছি কিন্তু, অপর কে নিন্দা করে যে মানুষ, সে আমার প্রতি বিদ্বেষ করে ... সে কিছু মানে না।
তানহং(ন্) দ্বিষতঃ(খ্) ক্রূরান্, সংসারেষু নরাধমান্৷
ক্ষিপাম্যজস্রমশুভান্ , আসুরীষ্বেব যোনিষু৷৷19৷৷
সেই দ্বেষপরায়ণ, পাপাচারী, ক্রূর, নরাধমদের আমি এই সংসারে বারংবার আসুরী যোনিতে নিক্ষেপ করি।
এখানে শ্রী ভগবান অত্যন্ত কঠিন শব্দ প্রয়োগ করেছেন। বলেছেন - অন্যের যে নিন্দা করে সে অশুভ, লম্পট, ক্রূর, নরাধম। এই ধরনের মানুষ কে আমি বারবার অসুর যোনিতে নিক্ষেপ করি।
আমরা যেরকম বীজ জমিতে বপন করবো, সেই রকম ফসল ই ফিরে পাবো। এটাই সৃষ্টির নিয়ম এবং কর্মের সিদ্ধান্ত। এখানেই ভগবানের অভিপ্রায় ঈশ্বরত্ব মানা হয়ে থাকে।
আমাদের শাস্ত্রে ঈশ্বরের বর্ণনা বৃষ্টির মতো বলা হয়েছে। যে বীজ বপন করা হয়েছে, তার উপর বৃষ্টির জল পড়লে সেই অনুসারে ফসল হবে। আমাদের বুঝতে হবে --- যে ফসল আসলে কর্ম অনুসারে ই হবে। কেউ যদি কাউকে হত্যা করে তবে বিচারক তাকে মৃত্যুদণ্ড ই দেবেন এবং জল্লাদ তাকে ফাঁসিতে ঝোলাবে। তাহলে সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে কে বধ করলো -- বিচারক না জল্লাদ ? কেউই নয়... নিজের কর্ম অনুযায়ী তার সাজা হয়েছে। প্রকৃতিরও নিজস্ব সংবিধান আছে। প্রকৃতি নিয়ম অনুসরণ করে চলে। সৃষ্টির সংবিধান হলো বেদ। ভগবান বলেছেন তিনি আসুরী প্রবৃত্তির লোকেদের বারবার অসুর যোনিতে পাঠান। তারা জন্ম থেকে তেমন পরিবেশে বেড়ে ওঠে। প্রহ্লাদের মতো মহাপ্রাণ খুব কমই অসুর যোনিতে জন্ম নেন, এবং সেই যোনিকে উদ্ধার করেন ।
আমরা যেরকম বীজ জমিতে বপন করবো, সেই রকম ফসল ই ফিরে পাবো। এটাই সৃষ্টির নিয়ম এবং কর্মের সিদ্ধান্ত। এখানেই ভগবানের অভিপ্রায় ঈশ্বরত্ব মানা হয়ে থাকে।
আমাদের শাস্ত্রে ঈশ্বরের বর্ণনা বৃষ্টির মতো বলা হয়েছে। যে বীজ বপন করা হয়েছে, তার উপর বৃষ্টির জল পড়লে সেই অনুসারে ফসল হবে। আমাদের বুঝতে হবে --- যে ফসল আসলে কর্ম অনুসারে ই হবে। কেউ যদি কাউকে হত্যা করে তবে বিচারক তাকে মৃত্যুদণ্ড ই দেবেন এবং জল্লাদ তাকে ফাঁসিতে ঝোলাবে। তাহলে সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে কে বধ করলো -- বিচারক না জল্লাদ ? কেউই নয়... নিজের কর্ম অনুযায়ী তার সাজা হয়েছে। প্রকৃতিরও নিজস্ব সংবিধান আছে। প্রকৃতি নিয়ম অনুসরণ করে চলে। সৃষ্টির সংবিধান হলো বেদ। ভগবান বলেছেন তিনি আসুরী প্রবৃত্তির লোকেদের বারবার অসুর যোনিতে পাঠান। তারা জন্ম থেকে তেমন পরিবেশে বেড়ে ওঠে। প্রহ্লাদের মতো মহাপ্রাণ খুব কমই অসুর যোনিতে জন্ম নেন, এবং সেই যোনিকে উদ্ধার করেন ।
আসুরীং(য়্ঁ) য়োনিমাপন্না, মূঢ়া জন্মনি জন্মনি৷
মামপ্রাপ্যৈব কৌন্তেয়, ততো য়ান্ত্যধমাং(ঙ্) গতিম্৷৷16.20৷৷
হে অর্জুন ! সেই মূঢ় ব্যক্তিগণ আমাকে প্রাপ্ত না হয়ে জন্মান্তরে আসুরী-যোনি প্রাপ্ত হয় এবং ক্রমে তা থেকেও অত্যন্ত নিম্নগতি প্রাপ্ত হয় অর্থাৎ ঘোর নরকে পতিত হয়।
শ্রী ভগবান বলেছেন... হে কৌন্তেয়! পরমাত্মা প্রাপ্ত না হওয়ার কারণে এইরূপ অজ্ঞানী, নরাধম, ক্রূরতা সম্পন্ন মানুষ দের বারবার আসুরী যোনিতে পাঠাই। তারা বারবার এইরকম যোনিতে জন্ম নেয়। অতঃপর আমিই (শ্রীভগবান) সৃষ্টি কে এইরকম মানুষ থেকে মুক্ত করি। এখনকার প্রেক্ষাপটে শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের একত্রিত শক্তি কে ই ভগবানের স্বরূপ মনে করা হয়।
হ্যাঁ , শুভ শক্তি ই দুর্জনের শক্তি কে পরাজিত করে সৃষ্টি কে পাপ মুক্ত করতে পারে। তাই শুভ শক্তিসম্পন্ন মানুষ কে পরমাত্মার স্বরূপ বলা হয়। দৈব শক্তি ও অশুভ শক্তি চিনে নিতে কিছু কিছু কথা মনে রাখতে হবে -- প্রথমত -- নিজের ভিতরে তাকাতে হবে যে, আমি কেমন .... তারপর আমার আশপাশের মানুষজন কেমন , এবং আমাদের সন্তানদের সঙ্গী সাথীরা কেমন । মনুষ্য জন্ম এতোই উন্নত যে চেষ্টা করলে আমরা ভগবানের সাক্ষাৎ ও পেতে পারি। শুধু আমাদের সমস্ত কোষ... যেমন - অন্নময় কোষ, প্রাণময় কোষ, মনোময় কোষ, আনন্দময় কোষ এবং অন্তময় কোষের বিকাশ ঘটাতে হবে । এর ফলে নিজের জীবনে সীমাহীন আনন্দ ও কল্যাণ লাভ হতে পারে। গীতায় শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনের মাধ্যমে মানবজাতিকে কল্যাণের মার্গ দেখিয়েছেন ।
হ্যাঁ , শুভ শক্তি ই দুর্জনের শক্তি কে পরাজিত করে সৃষ্টি কে পাপ মুক্ত করতে পারে। তাই শুভ শক্তিসম্পন্ন মানুষ কে পরমাত্মার স্বরূপ বলা হয়। দৈব শক্তি ও অশুভ শক্তি চিনে নিতে কিছু কিছু কথা মনে রাখতে হবে -- প্রথমত -- নিজের ভিতরে তাকাতে হবে যে, আমি কেমন .... তারপর আমার আশপাশের মানুষজন কেমন , এবং আমাদের সন্তানদের সঙ্গী সাথীরা কেমন । মনুষ্য জন্ম এতোই উন্নত যে চেষ্টা করলে আমরা ভগবানের সাক্ষাৎ ও পেতে পারি। শুধু আমাদের সমস্ত কোষ... যেমন - অন্নময় কোষ, প্রাণময় কোষ, মনোময় কোষ, আনন্দময় কোষ এবং অন্তময় কোষের বিকাশ ঘটাতে হবে । এর ফলে নিজের জীবনে সীমাহীন আনন্দ ও কল্যাণ লাভ হতে পারে। গীতায় শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনের মাধ্যমে মানবজাতিকে কল্যাণের মার্গ দেখিয়েছেন ।
ত্রিবিধং(ন্) নরকস্যেদং(ন্), দ্বারং(ন্) নাশনমাত্মনঃ৷
কামঃ(খ্) ক্রোধস্তথা লোভঃ(স্), তস্মাদেতত্ত্রয়ং(ন্) ত্যজেৎ৷৷21৷৷
কাম, ক্রোধ এবং লোভ—এই তিনটি নরকের দ্বার স্বরূপএবং আত্মার হননকারী অর্থাৎ আত্মাকে অধোগামী করে। অতএব এই তিনটি বিষবৎ ত্যাগ করা উচিত।
কাম, ক্রোধ ও লোভ এই তিনটি খারাপ গুণ মানুষ কে কামনার জালে জড়িয়ে ফেলে। যখন কামনা পূরন হয় না, তখন ক্রোধ বাড়ে এবং যদি কামনা পূরন হয়ে যায়, তখন লোভ বেড়ে যায়। এই প্রবৃত্তির লোক নিজের ক্ষতি করার সাথে সাথে অন্যদের ও অহিতসাধন করে । শ্রীভগবান কাম, ক্রোধ ও লোভ কে নরকের তিন দ্বার বলেছেন। এই তিন অবগুণ জীবনযাত্রার মান নামিয়ে দেয় এবং এর ফলে ভগবান ও তাদের প্রতি বিমুখ হন। এজন্য ভগবান বলেছেন এই তিন অবগুণ পরিত্যাগ করতে হবে , কারণ এগুলো মানব আত্মার পতন ঘটায় । নির্ধন ব্যক্তিই শুধু চুরি করে তা নয়, ধনী ব্যক্তি ও লোভের বশে চুরি করে অহরহ ।
স্বামী বিবেকানন্দ খুবই সুন্দর কথা বলেছেন ---
অর্থাৎ, স্বর্গ এবং নরক দূরে নয়। যদি আমরা ভালো সঙ্গে থাকি তো সেটাই স্বর্গ। এবং যদি খারাপ সঙ্গে থাকি তো সেটা নরক।
স্বামী বিবেকানন্দ খুবই সুন্দর কথা বলেছেন ---
Heaven and Hell are not things far off,
To be in the company of good is Heaven
And to be in the company of bad is Hell...*
To be in the company of good is Heaven
And to be in the company of bad is Hell...*
অর্থাৎ, স্বর্গ এবং নরক দূরে নয়। যদি আমরা ভালো সঙ্গে থাকি তো সেটাই স্বর্গ। এবং যদি খারাপ সঙ্গে থাকি তো সেটা নরক।
এতৈর্বিমুক্তঃ(খ্) কৌন্তেয়, তমোদ্বারৈস্ত্রিভির্নরঃ৷
আচরত্যাত্মনঃ(শ্) শ্রেয়ঃ(স্), ততো যাতি পরাং(ঙ) গতিম্৷22৷৷
হে অর্জুন ! এই তিন নরকের দ্বার হতে মুক্ত ব্যক্তি নিজ কল্যাণ সাধনে সমর্থ হন । সেইজন্য তিনি পরমগতি প্রাপ্ত হন অর্থাৎ আমাকে লাভ করেন।
শ্রী ভগবান বলেছেন... হে কৌন্তেয়! যদি কোন ব্যক্তি এই তিন দ্বার কে পেরিয়ে আসতে পারে, তাহলে সে আমাকেই পাবে। কামনা পূর্ণ করার চেষ্টা করা উচিত কিন্তু তার জন্য নিজের জীবন নষ্ট করা ঠিক নয়।
এই প্রসঙ্গে বিখ্যাত লেখক টলস্টয়ের একটা গল্প বলা যায় --
এক গরীব কৃষক রাজার কাছে গিয়ে আর্জি জানালো যে তার জমি চাই। রাজা জিজ্ঞাসা করলেন -- কতটা জমি চাই ? কৃষক উত্তর দিলো... তার অনেক অনেক জমি চাই । রাজা বললেন বেশ -- তুমি তাহলে দৌড় শুরু করো। এবং সূর্যাস্তের পূর্ব অবধি তুমি যতটা জমিতে দৌড়াতে পারবে... ততটা জমি তোমার । কিন্তু সূর্যাস্তের আগে তোমাকে রাজসভায় ফিরে আসতে হবে ।
খুশিতে ডগমগ কৃষক দৌড় শুরু করো দিলো । দৌড়াতে দৌড়াতে সে অবসন্ন হয়ে পড়লো, তবু তার লালসা মেটে না --- তার আরও জমি চাই ... আরও কিছুক্ষণ পরে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়লো এবং সেখানেই মারা গেল ।
এই গল্প আমাদের একটা শিক্ষা দেয় যে জীবনের শেষে শুধুমাত্র ছয় গজ জমিই আমাদের লাগে। কিন্তু, সঞ্চয়ের নেশায় মানুষ ভুলে যায় কোথায় থামে উচিত।
এই বিষয়ে গুরুজি মহারাজ বলেছেন যে জীবন বিকার পূর্ণ । এই বিকার তাড়াতাড়ি দূর করা উচিত, এবং সকারাত্মক ভাবনা দ্বারা এই নেতিবাচক বিকার দূর করা সম্ভব ।
ভগবান তুলসীদাস জী বলেছেন --
এই প্রসঙ্গে বিখ্যাত লেখক টলস্টয়ের একটা গল্প বলা যায় --
এক গরীব কৃষক রাজার কাছে গিয়ে আর্জি জানালো যে তার জমি চাই। রাজা জিজ্ঞাসা করলেন -- কতটা জমি চাই ? কৃষক উত্তর দিলো... তার অনেক অনেক জমি চাই । রাজা বললেন বেশ -- তুমি তাহলে দৌড় শুরু করো। এবং সূর্যাস্তের পূর্ব অবধি তুমি যতটা জমিতে দৌড়াতে পারবে... ততটা জমি তোমার । কিন্তু সূর্যাস্তের আগে তোমাকে রাজসভায় ফিরে আসতে হবে ।
খুশিতে ডগমগ কৃষক দৌড় শুরু করো দিলো । দৌড়াতে দৌড়াতে সে অবসন্ন হয়ে পড়লো, তবু তার লালসা মেটে না --- তার আরও জমি চাই ... আরও কিছুক্ষণ পরে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়লো এবং সেখানেই মারা গেল ।
এই গল্প আমাদের একটা শিক্ষা দেয় যে জীবনের শেষে শুধুমাত্র ছয় গজ জমিই আমাদের লাগে। কিন্তু, সঞ্চয়ের নেশায় মানুষ ভুলে যায় কোথায় থামে উচিত।
এই বিষয়ে গুরুজি মহারাজ বলেছেন যে জীবন বিকার পূর্ণ । এই বিকার তাড়াতাড়ি দূর করা উচিত, এবং সকারাত্মক ভাবনা দ্বারা এই নেতিবাচক বিকার দূর করা সম্ভব ।
ভগবান তুলসীদাস জী বলেছেন --
इति वदति तुलसीदास शंकर, शेष मुनि मन रंजनं ।
मम् हृदय-कंज निवास कुरु, कामादि खलदल गंजनं ॥
তুলসীদাস জী বলেছেন.... হে রাম জী!! আপনি সর্বদা আমার হৃদয়ে বাস করুন। কারণ, আপনি থাকলে সমস্ত বিকার নষ্ট হয়ে যাবে। আপনি অবিকারী। শুভ চিন্তা আসলে মনের সমস্ত নেতিবাচকতা দূর হয়ে যায়। যতদিন জীবন থাকবে, ততদিনই এই চেষ্টা করে যেতে হবে। এই কার্যই আমাদের পাথেয়।मम् हृदय-कंज निवास कुरु, कामादि खलदल गंजनं ॥
যঃ(শ্) শাস্ত্রবিধিমুৎসৃজ্য, বর্ততে কামকারতঃ৷
ন স সিদ্ধিমবাপ্নোতি, ন সুখং(ন্) ন পরাং(ঙ) গতিম্৷৷23৷৷
যে ব্যক্তি শাস্ত্রবিধি ত্যাগ করে স্বেচ্ছাচারী হয়ে খুশিমতো আচরণ করে, সে সিদ্ধি লাভ করে না,মোক্ষলাভ করে না এবং সুখও প্রাপ্ত হয় না।
শাস্ত্র এবং তার নিয়মাবলি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সামাজিক অনুশাসন পালন করে চলা সৃষ্টির উন্নয়নের জন্য খুব প্রয়োজন। যদি কোন ব্যক্তি তার লোভ লালসা বা কামনা পূর্তির জন্য নিয়ম না মানে তাহলে তার মধ্যে আসুরিক প্রবৃত্তি জেগে ওঠে। অহংকারে মত্ত হয়ে আমরা অনেক সময়ই অনুশাসন ভেঙে ফেলি, এবং এটা খুবই অন্যায় কাজ। অনেক সময় আমরা ট্রাফিক সিগন্যাল মানি না। এতে হয়তো সাময়িক ভাবে আমাদের আনন্দ হয় কিন্তু তা অন্যদের অনেক অসুবিধার কারণ হতে পারে। সমস্ত রকম আইন বা নিয়ম ভাঙতে থাকলে তার পরিণাম সুখের হয় না। না সিদ্ধি প্রাপ্ত হয়, না পরমগতি প্রাপ্ত হয়।
বাদশাহ আওরঙ্গজেব বারবার মারাঠা আক্রমণ করেছেন। শিবাজী মহারাজ বারবার প্রতিরোধ করেছেন। এমনকি তাঁর মৃত্যুর পরেও পঁচিশ বছর মারাঠি সৈন্য রা নিজের ভূমি রক্ষা করেছেন। বাদশাহ তাঁর অন্তিম সময়ে তাঁর জীবনী তে লিখেছেন -- সারা জীবন কেবল রাজ্য বিস্তার করতে সময় কাটালাম, কোন ভালো কাজ করা হলো না।
বাদশাহ আওরঙ্গজেব বারবার মারাঠা আক্রমণ করেছেন। শিবাজী মহারাজ বারবার প্রতিরোধ করেছেন। এমনকি তাঁর মৃত্যুর পরেও পঁচিশ বছর মারাঠি সৈন্য রা নিজের ভূমি রক্ষা করেছেন। বাদশাহ তাঁর অন্তিম সময়ে তাঁর জীবনী তে লিখেছেন -- সারা জীবন কেবল রাজ্য বিস্তার করতে সময় কাটালাম, কোন ভালো কাজ করা হলো না।
তস্মাচ্ছাস্ত্রং(ম্) প্রমাণং(ন্) তে, কার্যাকার্যব্যবস্থিতৌ৷
জ্ঞাত্বা শাস্ত্রবিধানোক্তং(ঙ), কর্ম কর্তুমিহার্হসি৷৷24৷৷
কর্তব্য ও অকর্তব্য নির্ধারণে তোমার নিকট শাস্ত্রই প্রমাণ। অতএব কর্তব্য-অকর্তব্য নির্ধারণে শাস্ত্রবিধি জেনে তোমার কর্ম করা উচিত।
শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন... হে অর্জুন! তুমি শাস্ত্রবিহিত আচরণ কর' এবং শাস্ত্রের উপর সম্পূর্ণ বিশ্বাস রাখো। শাস্ত্রে বর্ণিত নিয়মাদি পালন করাই তোমার জন্য উত্তম। যদি কোন সমস্যা ও হয়, শাস্ত্র অনুযায়ী নিয়ম মেনে তা সমাধান করা সম্ভব ।
বিদ্যুতের মধ্যেও শাস্ত্র আছে, বিজ্ঞানে ও শাস্ত্র আছে। অধ্যাত্মতার মধ্যে ও শাস্ত্র আছে এবং লৌকিক জ্ঞান ও শাস্ত্রবিহিত। জীবনের মর্ম ই শাস্ত্রে নিহিত। নিয়ম পালন করার কথাও আমাদের শাস্ত্রে বলা হয়েছে। শাস্ত্রে শ্রদ্ধা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মাবলি পালন করা সকলের জন্যই মঙ্গলকর। আর শ্রীমদভগবদগীতা তো কিভাবে ভৌতিক জ্ঞান ও নৈতিকতার সঙ্গে কর্ম করতে হবে তার শিক্ষা দেন। শ্রীভগবান বলেছেন -- শাস্ত্রের উপর বিশ্বাস রেখে সঠিক আচরণ করাই হিতকর।
শ্রী ভগবান বলেছেন... যদি শাস্ত্রের জন্য তোমাকে কোন ভয়ানক প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হতে হয়, নির্ভয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা কর'। এতে তোমার জীবন সুখময় হয়ে উঠবে । শ্রীমদভগবদগীতা অত্যন্ত কল্যাণকারী ধর্মশাস্ত্র... কল্যাণ করার সাথে সাথে মানুষের দুঃখ ও নাশ করে। পরমপদ প্রাপ্তির পথে অগ্রসর হওয়া যায় ।
বিবেচন সত্র এখানে শেষ হলো । এরপর প্রশ্নোত্তর পর্ব ।
প্রশ্নকর্তা : শশী ঠাকুর জী
প্রশ্ন : দুর্গুণ চিন্তা দূর করার জন্য এবং আসুরিক গুণ থেকে বাঁচতে কি করা উচিত আরেক বার যদি বলেন...
উত্তর : দুর্গুণ থেকে বাঁচতে হলে সেই ব্যাপারে চিন্তা করা বন্ধ করতে হবে । নেতিবাচক চিন্তা থেকে মন কে সরিয়ে সদগুণে নিয়োজিত করতে হবে। এইভাবে অভ্যাস করলে আপনা থেকেই মনে সগুণের সংক্রমণ ঘটবে ।
প্রশ্নকর্তা : এস. এস. সিং জী
প্রশ্ন : এমন কি কোন উপায় আছে যাতে মনে কামের কোন চিন্তা না আসে ??
উত্তর : কর্তব্যে অনুপ্রাণিত হয়ে যে কামনা আমাদের মনে আসে, তা ভগবানের ই স্বরূপ । কারণ, কামনা না থাকলে জীবনে কোন লক্ষ্য ও থাকবে না। আমার কামনা পূরনে যদি অন্যদের মঙ্গল হয়, তাহলে সেই কামনা ভুল নয়। গীতা আমাদের শেখায় যে জীবনে ভৌতিক প্রগতির ও প্রয়োজন আছে। জীবনের কামনা পূরন করতে গিয়ে যেন নৈতিকতা কে ছাড়তে না হয় সেই খেয়াল রাখতে হবে ।
সপ্তম অধ্যায়ে শ্রী ভগবান বলেছেন ---
- অর্থাৎ, হে ভরতর্ষভ!! আমি বলবান পুরুষের কাম ও আসক্তি বিহীন শক্তি আমি ধর্মগ্রন্থের বিরুদ্ধে নই। নিজের স্বার্থে অন্যের উপর অত্যাচার করা ও সেভাবে কামনা বাসনা পূর্ণ করা আসুরী গুণের আধার।
প্রশ্নকর্তা : হনুমান প্রসাদ জী
প্রশ্ন : নিষ্কাম ভক্তির ব্যাপারে আরেকটু বলুন দয়া করে ।
উত্তর : আমরা ভগবানের কাছে অনেক কিছু চাই, এতে তেমন দোষ ও নেই। তিনি তো আমাদের পিতা। আর পিতার কাছে সন্তান তো সবকিছু চাইতেই পারে। এভাবে চাইতে চাইতে একদিন মনে হতে পারে আমার আর কিছু চাই না, শুধু তোমাকে চাই। সেখান থেকেই নিষ্কাম ভক্তির সূচনা। বাচ্চা যেমন খেলনা নিয়ে খেলতে খেলতে একসময় বিরক্ত হয়ে খেলনা ফেলে মা কে ডাকে, তখন তার শুধু মা কেই প্রয়োজন, তেমনই ।
প্রশ্নকর্তা : অপর্ণা পাল চৌহান জী
প্রশ্ন : যুদ্ধের সময় সৈনিক রা যদি জানতে পারে তাদের ঊর্ধ্বতন কর্তাদের উদ্দেশ্য খারাপ এবং তার পরেও যদি যুদ্ধ করে তাহলে কি সেই সৈনিকদের আসুরিক প্রবৃত্তির বলা হবে ?
উত্তর : ঊর্ধ্বতনের আজ্ঞা যখন পালন করা হয়, তখন তা কর্তব্য পালনের দৃষ্টিতে দেখা হয়। নিজের কর্তব্য পালন করা উচিত সম্পূর্ণ মন দিয়ে এবং অন্য দিকে কি হচ্ছে সেটা মনে না আনলে সেই কর্মে আর নিজের দোষ থাকে না। যেমন জল্লাদ অপরাধী কে ফাঁসিতে ঝোলালেও তার কোন দোষ হয় না।
বিদ্যুতের মধ্যেও শাস্ত্র আছে, বিজ্ঞানে ও শাস্ত্র আছে। অধ্যাত্মতার মধ্যে ও শাস্ত্র আছে এবং লৌকিক জ্ঞান ও শাস্ত্রবিহিত। জীবনের মর্ম ই শাস্ত্রে নিহিত। নিয়ম পালন করার কথাও আমাদের শাস্ত্রে বলা হয়েছে। শাস্ত্রে শ্রদ্ধা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মাবলি পালন করা সকলের জন্যই মঙ্গলকর। আর শ্রীমদভগবদগীতা তো কিভাবে ভৌতিক জ্ঞান ও নৈতিকতার সঙ্গে কর্ম করতে হবে তার শিক্ষা দেন। শ্রীভগবান বলেছেন -- শাস্ত্রের উপর বিশ্বাস রেখে সঠিক আচরণ করাই হিতকর।
শ্রী ভগবান বলেছেন... যদি শাস্ত্রের জন্য তোমাকে কোন ভয়ানক প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হতে হয়, নির্ভয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা কর'। এতে তোমার জীবন সুখময় হয়ে উঠবে । শ্রীমদভগবদগীতা অত্যন্ত কল্যাণকারী ধর্মশাস্ত্র... কল্যাণ করার সাথে সাথে মানুষের দুঃখ ও নাশ করে। পরমপদ প্রাপ্তির পথে অগ্রসর হওয়া যায় ।
বিবেচন সত্র এখানে শেষ হলো । এরপর প্রশ্নোত্তর পর্ব ।
:: প্রশ্নোত্তর ::
প্রশ্নকর্তা : শশী ঠাকুর জী
প্রশ্ন : দুর্গুণ চিন্তা দূর করার জন্য এবং আসুরিক গুণ থেকে বাঁচতে কি করা উচিত আরেক বার যদি বলেন...
উত্তর : দুর্গুণ থেকে বাঁচতে হলে সেই ব্যাপারে চিন্তা করা বন্ধ করতে হবে । নেতিবাচক চিন্তা থেকে মন কে সরিয়ে সদগুণে নিয়োজিত করতে হবে। এইভাবে অভ্যাস করলে আপনা থেকেই মনে সগুণের সংক্রমণ ঘটবে ।
প্রশ্নকর্তা : এস. এস. সিং জী
প্রশ্ন : এমন কি কোন উপায় আছে যাতে মনে কামের কোন চিন্তা না আসে ??
উত্তর : কর্তব্যে অনুপ্রাণিত হয়ে যে কামনা আমাদের মনে আসে, তা ভগবানের ই স্বরূপ । কারণ, কামনা না থাকলে জীবনে কোন লক্ষ্য ও থাকবে না। আমার কামনা পূরনে যদি অন্যদের মঙ্গল হয়, তাহলে সেই কামনা ভুল নয়। গীতা আমাদের শেখায় যে জীবনে ভৌতিক প্রগতির ও প্রয়োজন আছে। জীবনের কামনা পূরন করতে গিয়ে যেন নৈতিকতা কে ছাড়তে না হয় সেই খেয়াল রাখতে হবে ।
সপ্তম অধ্যায়ে শ্রী ভগবান বলেছেন ---
বলং বলবতাং চাহং , কামরাগবিবর্জিতম্।
ধর্মাবিরুদ্ধো ভূতেষু, কামোऽস্মি ভরতর্ষভ।।(৭/১১)
ধর্মাবিরুদ্ধো ভূতেষু, কামোऽস্মি ভরতর্ষভ।।(৭/১১)
- অর্থাৎ, হে ভরতর্ষভ!! আমি বলবান পুরুষের কাম ও আসক্তি বিহীন শক্তি আমি ধর্মগ্রন্থের বিরুদ্ধে নই। নিজের স্বার্থে অন্যের উপর অত্যাচার করা ও সেভাবে কামনা বাসনা পূর্ণ করা আসুরী গুণের আধার।
প্রশ্নকর্তা : হনুমান প্রসাদ জী
প্রশ্ন : নিষ্কাম ভক্তির ব্যাপারে আরেকটু বলুন দয়া করে ।
উত্তর : আমরা ভগবানের কাছে অনেক কিছু চাই, এতে তেমন দোষ ও নেই। তিনি তো আমাদের পিতা। আর পিতার কাছে সন্তান তো সবকিছু চাইতেই পারে। এভাবে চাইতে চাইতে একদিন মনে হতে পারে আমার আর কিছু চাই না, শুধু তোমাকে চাই। সেখান থেকেই নিষ্কাম ভক্তির সূচনা। বাচ্চা যেমন খেলনা নিয়ে খেলতে খেলতে একসময় বিরক্ত হয়ে খেলনা ফেলে মা কে ডাকে, তখন তার শুধু মা কেই প্রয়োজন, তেমনই ।
প্রশ্নকর্তা : অপর্ণা পাল চৌহান জী
প্রশ্ন : যুদ্ধের সময় সৈনিক রা যদি জানতে পারে তাদের ঊর্ধ্বতন কর্তাদের উদ্দেশ্য খারাপ এবং তার পরেও যদি যুদ্ধ করে তাহলে কি সেই সৈনিকদের আসুরিক প্রবৃত্তির বলা হবে ?
উত্তর : ঊর্ধ্বতনের আজ্ঞা যখন পালন করা হয়, তখন তা কর্তব্য পালনের দৃষ্টিতে দেখা হয়। নিজের কর্তব্য পালন করা উচিত সম্পূর্ণ মন দিয়ে এবং অন্য দিকে কি হচ্ছে সেটা মনে না আনলে সেই কর্মে আর নিজের দোষ থাকে না। যেমন জল্লাদ অপরাধী কে ফাঁসিতে ঝোলালেও তার কোন দোষ হয় না।
।। ওঁ তৎসৎ ।।